বাংলা ২য় পত্র
আপডেট: ০০:০৮, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬ |
প্রিয় পরীক্ষার্থী, ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়
বাংলা ২য় পত্রের ৮ (ক) নম্বর প্রশ্নটি থাকবে ‘দিনলিপি’ লেখার ওপর, নম্বর থাকবে ১০। আজ ৮ (ক) নম্বর প্রশ্নের নমুনা উত্তরটি লিখেছে হলিক্রস কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী
লাজিমা তারান্নুম অসমিতা
৮ (ক) নম্বর প্রশ্ন: দিনলিপি
প্রশ্ন: জাদুঘর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি দিনলিপি লেখো।
উত্তর:
জাদুঘর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি
২ জানুয়ারি ২০১৬
১৩৬ গ্রিন রোড, ঢাকা
সময়: রাত ১০টা
বাঙালি হিসেবে নিজেকে আজ আরও গর্বিত মনে হচ্ছে। কেননা, আজ আমি বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক জাতীয় জাদুঘর দেখে এসেছি। তাই এই দিনটি আমি আমার স্মৃতির পাতায় আটকে রাখতে চাই।
দিনের প্রথম ভাগ: খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। আগের দিন রাতেই বাবা ও মামার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছিল জাদুঘরে যাওয়া নিয়ে। ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে নাশতা করলাম। অতঃপর তৈরি হয়ে নিলাম। সকাল ১০টার দিকে আমি, বাবা ও মামা জাদুঘরের উদ্দেশে রওনা হলাম। রাস্তায় যানজটের ভিড় ঠেলে বেলা সাড়ে ১১টায় জাদুঘরে পৌঁছালাম।
দিনের মধ্য ভাগ: প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশ নানা ধাপ অতিক্রম করেছে। আর এসবের চিহ্ন ধারণ করে আছে আমাদের জাতীয় জাদুঘর। শাহবাগে অবস্থিত এই জাদুঘরের বাঁ দিকের গেট দিয়ে ঢুকতেই নজর কাড়ল ডান পাশে অর্ধবৃত্তাকার মৌসুমি ফুলের বাগান আর চারদিকের সবুজ গাছপালা। ১৯১৩ সালের ২০ মার্চ স্থাপিত এই জাদুঘরটি বর্তমানে আট একর জায়গার ওপর একটি সুদৃশ্য ভবন। ভবনের মেটাল ডিটেক্টর দরজা দিয়ে ঢুকেই চোখে পড়ল নভেরার একটি নান্দনিক ভাস্কর্য। ডান দিকে রয়েছে অফিস আর বাঁ দিকে অডিটোরিয়াম। এরপর বড় সিঁড়ি দিয়ে আমি, বাবা ও মামা দোতলায় এলাম। প্রথমেই দেখলাম বাংলাদেশের বিশাল একটি মানচিত্র, যেটি দেখলে একনজরেই বোঝা যায় কোথায় কী আছে। বাঁ দিক দিয়ে ঢুকলাম গ্যালারিতে। সেখানে রয়েছে গাছপালা, জীবজন্তু, উপজাতি জনজীবন, অতীতের সব মুদ্রা ও স্থাপত্য। অবাক হলাম হাতির দাঁতের পাটি, মৌমাছিসহ মৌচাক দেখে। তৃতীয় তলায় রয়েছে নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, চীনামাটির শিল্পকর্ম, নকশিকাঁথা, অলংকার ও প্রাচীন বাংলার নানা নিদর্শন। দেখতে পেলাম প্রথম শহীদ মিনারের পিলার। ভাষাশহীদদের রক্তমাখা শার্ট, বধ্যভূমিতে পাওয়া মাথার খুলি; যা আমাদের নির্মম ইতিহাস ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিল। চতুর্থ তলায় দেখলাম চীনের বিখ্যাত টেরাকোটা ওয়ারিয়র। এখানে আরও দেখলাম বিশ্ববরেণ্য মনীষীদের প্রতিকৃতি ও বিশ্ব শিল্পকলার সমাহার। মনে হচ্ছিল, আমি এঁদেরই অংশ, এঁদের সমসাময়িক। সময় শেষ হয়ে এল, বেরিয়ে এলাম; কিন্তু সঙ্গে আনলাম বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা ও গর্ব।
দিনের শেষ ভাগ: জাদুঘর থেকে ফিরতে ফিরতে বেলা প্রায় সাড়ে তিনটা বেজে গেল। বাসায় ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তবু মনের ভেতর অন্য রকম আনন্দ অনুভব করছি। হাত-মুখ ধুয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম।
সন্ধ্যার প্রথম ভাগ: সন্ধ্যায় মায়ের সঙ্গে বসে জাদুঘরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলাম। নিজের দেশ, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি বলে মা খুব খুশি হলেন। হালকা নাশতা করে পড়তে বসলাম।
আজকের এই দিনটিতে আমি এক নতুন আত্মপরিচয় লাভ করেছি বলে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আপডেট: ০০:০৮, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬ |
প্রিয় পরীক্ষার্থী, ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়
বাংলা ২য় পত্রের ৮ (ক) নম্বর প্রশ্নটি থাকবে ‘দিনলিপি’ লেখার ওপর, নম্বর থাকবে ১০। আজ ৮ (ক) নম্বর প্রশ্নের নমুনা উত্তরটি লিখেছে হলিক্রস কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী
লাজিমা তারান্নুম অসমিতা
৮ (ক) নম্বর প্রশ্ন: দিনলিপি
প্রশ্ন: জাদুঘর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি দিনলিপি লেখো।
উত্তর:
জাদুঘর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি
২ জানুয়ারি ২০১৬
১৩৬ গ্রিন রোড, ঢাকা
সময়: রাত ১০টা
বাঙালি হিসেবে নিজেকে আজ আরও গর্বিত মনে হচ্ছে। কেননা, আজ আমি বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক জাতীয় জাদুঘর দেখে এসেছি। তাই এই দিনটি আমি আমার স্মৃতির পাতায় আটকে রাখতে চাই।
দিনের প্রথম ভাগ: খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। আগের দিন রাতেই বাবা ও মামার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছিল জাদুঘরে যাওয়া নিয়ে। ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে নাশতা করলাম। অতঃপর তৈরি হয়ে নিলাম। সকাল ১০টার দিকে আমি, বাবা ও মামা জাদুঘরের উদ্দেশে রওনা হলাম। রাস্তায় যানজটের ভিড় ঠেলে বেলা সাড়ে ১১টায় জাদুঘরে পৌঁছালাম।
দিনের মধ্য ভাগ: প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশ নানা ধাপ অতিক্রম করেছে। আর এসবের চিহ্ন ধারণ করে আছে আমাদের জাতীয় জাদুঘর। শাহবাগে অবস্থিত এই জাদুঘরের বাঁ দিকের গেট দিয়ে ঢুকতেই নজর কাড়ল ডান পাশে অর্ধবৃত্তাকার মৌসুমি ফুলের বাগান আর চারদিকের সবুজ গাছপালা। ১৯১৩ সালের ২০ মার্চ স্থাপিত এই জাদুঘরটি বর্তমানে আট একর জায়গার ওপর একটি সুদৃশ্য ভবন। ভবনের মেটাল ডিটেক্টর দরজা দিয়ে ঢুকেই চোখে পড়ল নভেরার একটি নান্দনিক ভাস্কর্য। ডান দিকে রয়েছে অফিস আর বাঁ দিকে অডিটোরিয়াম। এরপর বড় সিঁড়ি দিয়ে আমি, বাবা ও মামা দোতলায় এলাম। প্রথমেই দেখলাম বাংলাদেশের বিশাল একটি মানচিত্র, যেটি দেখলে একনজরেই বোঝা যায় কোথায় কী আছে। বাঁ দিক দিয়ে ঢুকলাম গ্যালারিতে। সেখানে রয়েছে গাছপালা, জীবজন্তু, উপজাতি জনজীবন, অতীতের সব মুদ্রা ও স্থাপত্য। অবাক হলাম হাতির দাঁতের পাটি, মৌমাছিসহ মৌচাক দেখে। তৃতীয় তলায় রয়েছে নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, চীনামাটির শিল্পকর্ম, নকশিকাঁথা, অলংকার ও প্রাচীন বাংলার নানা নিদর্শন। দেখতে পেলাম প্রথম শহীদ মিনারের পিলার। ভাষাশহীদদের রক্তমাখা শার্ট, বধ্যভূমিতে পাওয়া মাথার খুলি; যা আমাদের নির্মম ইতিহাস ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিল। চতুর্থ তলায় দেখলাম চীনের বিখ্যাত টেরাকোটা ওয়ারিয়র। এখানে আরও দেখলাম বিশ্ববরেণ্য মনীষীদের প্রতিকৃতি ও বিশ্ব শিল্পকলার সমাহার। মনে হচ্ছিল, আমি এঁদেরই অংশ, এঁদের সমসাময়িক। সময় শেষ হয়ে এল, বেরিয়ে এলাম; কিন্তু সঙ্গে আনলাম বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা ও গর্ব।
দিনের শেষ ভাগ: জাদুঘর থেকে ফিরতে ফিরতে বেলা প্রায় সাড়ে তিনটা বেজে গেল। বাসায় ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তবু মনের ভেতর অন্য রকম আনন্দ অনুভব করছি। হাত-মুখ ধুয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম।
সন্ধ্যার প্রথম ভাগ: সন্ধ্যায় মায়ের সঙ্গে বসে জাদুঘরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলাম। নিজের দেশ, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি বলে মা খুব খুশি হলেন। হালকা নাশতা করে পড়তে বসলাম।
আজকের এই দিনটিতে আমি এক নতুন আত্মপরিচয় লাভ করেছি বলে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
No comments:
Post a Comment